তাসখেলা

রুবাইয়াৎ এ গাঞ্জিফা
ভারতের রঙিন গোল তাস

ভারতের তাস
আট কেতার (স্যুট) কার্ড দিয়ে খেলা গাঞ্জিফা নামের তাস পয়লা চালু হয় পারস্যে, কিন্তু পরে ভারতে এসে এই খেলা নানান নতুন রূপে এসে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথম প্রথম মুসলমান ঘরে এই খেলা চালু হলেও পরে হিন্দু খেলোয়াড়েরাও এই খেলায় অংশগ্রহণ শুরু করেন এবং তাদের মত করে খেলার কার্ড, কেতা ও নিয়ম চালু হয়।
সারা দুনিয়ার বিবিধ তাসের সাথে ভারতের তাসের মূল পার্থক্য ছিল যে তাসগুলো গোল, হাতে আঁকা এবং অসম্ভব চমৎকার ছবির মত ডিজাইন। আলাদা করে কোনটা তাস কোনটা শিল্প বোঝা দায়।
আজও উড়িষ্যায় কেউ কেউ এখনো এই খেলা খেলে থাকেন, ব্রিটিশের হাতে চলে আসা সস্তা মুদ্রিত কার্ড সবখানে ছড়িয়ে পড়ার পরে হাতে আঁকা বিভিন্ন গাঞ্জিফা খেলার পাট ধীরে ধীরে চুকে যায়।
গাঞ্জিফা তাস
মোগল নিয়মের গাঞ্জিফার আট কেতা (স্যুট): গুলাম (দাস), তাজ (মুকুট), শমশের (তলোয়ার), আশরাফি (স্বর্ণমুদ্রা), চাং (বাদ্যযন্ত্র), বারাত (নথি), টঙ্কা (রৌপ্যমুদ্রা) এবং কিমাশ (পণ্য)।
সবমিলিয়ে কার্ডের সংখ্যা ৯৬, প্রতি কেতায় বারোটা করে কার্ড (৮ x ১২)। রাজা, মন্ত্রী এবং ১ থেকে ১০ কার্ড। সমস্ত কার্ড গোল, এবং কোন নম্বর দেয়া নেই। চোখে দেখে বুঝতে হয় হাতে আঁকা কার্ড। যেমন শমশেরের আট কার্ডে আটটা তলোয়ার থাকবে, তাজ এর রাজা মাথায় মুকুট পরে হাতির উপর বসা থাকবে ইত্যাদি।
মোগল নিয়মের গাঞ্জিফা তাস অচিরেই টেবলটপ সিমুলেটরে আসছে এবং আপনি নিজেই বন্ধুবান্ধব নিয়ে অনলাইনে খেলতে পারবেন কিছুদিনের ভেতর।


দশাবতার তাস
দশ কেতার (স্যুট) গাঞ্জিফা খেলা দশাবতার তাস সম্ভবত চালু হয় সপ্তদশ শতাব্দীর দিকে, দাক্ষিণাত্যে। আট কেতার মোগল গাঞ্জিফার একটা নতুন রূপ। দশ কেতার ১২০ টি গোল তাস (১০ x ১২)। মৎস্য, কূর্ম, বরাহ, নরসিংহ, বামন, পরশুরাম, রাম, বলরাম, জগন্নাথ, কল্কি। দশ অবতারের নামে দশ কেতা। মোগল গাঞ্জিফার মতই বারোটা করে কার্ড (৮ x ১২)। রাজা, প্রধান এবং ১ থেকে ১০ কার্ড। বিষ্ণুপুর, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র ইত্যাদি এলাকার দশাবতার তাস ছিল বিখ্যাত, এখন খুব অল্প স্থানেই এই তাস পাওয়া যায়।
দশাবতার গাঞ্জিফা এখন টেবলটপ সিমুলেটরে আছে এবং আপনি চাইলেই স্টিম ইন্সটল করে টেবলটপ সিমুলেটরে খেলতে পারেন এই তিনশ বছরের পুরাতন খেলা।
গাঞ্জাপ্পা তাস
উড়িয়া ভাষায় গাঞ্জিফার নাম গাঞ্জাপ্পা, এই খেলা উড়িষ্যার কোথাও কোথাও এখনো চালু আছে। গাঞ্জাপ্পা দশাবতারের মতই তবে নবম অবতার জগন্নাথের জায়গায় বুদ্ধের উল্লেখ আছে, এছাড়া খেলার নিয়মও একটু আলাদা।
গাঞ্জাপ্পা নিয়ে বিস্তারিত পরে আসছে।
